মিশর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। পাশ্চাত্যে তিনি সালাদিন বলে পরিচিত। তিনি কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর লোক ছিলেন। লেভান্টে ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তিনি মুসলিম প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেন। ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে তার সালতানাতে মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১১৬৩ সালে তার জেনগি বংশীয় ঊর্ধ্বতন নুরউদ্দিন জেনগি তাকে ফাতেমীয় মিশরে প্রেরণ করেন। ক্রুসেডারদের আক্রমণের বিরুদ্ধে সামরিক সাফল্যের মাধ্যমে সালাহউদ্দিন ফাতেমীয় সরকারের উচ্চপদে পৌছান। ফাতেমীয় খলিফা আল আদিদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ১১৬৯ সালে তার চাচা শিরকুহ মৃত্যুবরণ করলে আল আদিদ সালাহউদ্দিনকে তার উজির নিয়োগ দেন। শিয়া নেতৃত্বাধীন খিলাফতে সুন্নি মুসলিমদের এমন পদ দেয়া বিরল ঘটনা ছিল। উজির থাকাকালে তিনি ফাতেমীয় শাসনের প্রতি বিরূপ ছিলেন। আল আদিদের মৃত্যুর পর তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং বাগদাদের আব্বাসীয় খিলাফতের আনুগত্য ঘোষণা করেন। পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি ফিলিস্তিনে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালান, ইয়েমেনে সফল বিজয় অভিযানের আদেশ দেন এবং উচ্চ মিশরে ফাতেমীয়পন্থি বিদ্রোহ উৎখাত করেন।
১১৭৪ সালে নুরউদ্দিনের মৃত্যুর অল্পকাল পরে সালাহউদ্দিন সিরিয়া বিজয়ে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দেন। দামেস্কের শাসকের অনুরোধে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শহরে প্রবেশ করেন। ১১৭৫ সালের মধ্যভাগে তিনি হামা ও হিমস জয় করেন। জেনগি নেতারা তার বিরোধী হয়ে পড়ে। সরকারিভাবে তারা সিরিয়ার শাসক ছিল। এরপর শীঘ্রই তিনি জেনগি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন এবং আব্বাসীয় খলিফা আল মুসতাদি কর্তৃক মিশর ও সিরিয়ার সুলতান ঘোষিত হন। উত্তর সিরিয়া ও জাজিরায় তিনি আরও অভিযান চালান। এসময় হাশাশিনদের দুটি হত্যাচেষ্টা থেকে তিনি বেঁচে যান। ১১৭৭ সালে তিনি মিশরে ফিরে আসেন। ১১৮২ সালে আলেপ্পো জয়ের মাধ্যমে সালাহউদ্দিন সিরিয়া জয় সমাপ্ত করেন। তবে জেনগিদের মসুলের শক্তঘাটি দখলে সমর্থ হননি।